৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো যতই প্রাণপণ লড়াই চালাক না কেন, আসল কথা বলেছে সেই ভোটাররাই। করোনা আবহে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা নিজেদের মতো করে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এবারের বিধানসভা নির্বাচন বিজেপি ও বিরোধী দলগুলোর কাছে গুরুত্বপূণ ছিল। মোট ৫টি বিষয়ের উপর ভিত্তি করেই এবারের নির্বাচনে বাজি মেরেছে আসলে জনতা জনার্দনই।
মুখ্যমন্ত্রীর মুখ: পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর 'মুখ' ছিলেন মমতা ব্যানার্জি। সেখানে বিজেপি তেমন কাউকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে ঠিক করতে পারেনি। বিভিন্ন নেতাদের দিয়ে নানা সময় প্রচার করিয়েও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ আসলে কে, তা ঠিক করে উঠতে ব্যর্থ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল। বরং রাজ্যের ভোটাররা প্রমাণ করে দিলেন, তাঁরা বাইরে থাকা আসা কেউ নয়, স্থানীয় মানুষকেই নিজেদের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। অন্যদিকে, অসমে বিজেপির কোনও মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ঠিক ছিল না। সোনোয়াল ছাড়া তালিকায় ছিলেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তামিলনাড়ুতে স্ট্যালিন ও এআইএডিএমকে পালানিস্বামিকে ঠিক করা হয়েছিল। কেরলে পিনারাই বিজয়নই একমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ছিলেন।
বিজেপির স্কোর: বিজেপি এবারের নির্বাচনে বুঝতে পেরেছে মমতা ব্যানার্জি, পিনারাই বিজয়নের মতো নেতাদের কাছে নিজেদের মাহাত্ম জাহির করে রাজ্যে খুব একটা লাভ হবে না। ২০১৯ সালের পর থেকে এমনিতেই বিধানসভা নির্বাচনগুলোতে বিজেপি খারাপ ফল করতে শুরু করেছে। মূলত ভোট ভাগাভাগির মাধ্যমেই নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে বিজেপি। কিন্তু এবার আর তা সম্ভব হয়নি।
মহিলা ভোটার: রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে বরাবরাই বঞ্চনার শিকার হয়েছেন মহিলা ভোটাররা। বিহারের নীতিশ কুমার সরকার এই মহিলা ভোটারদের সাহায্যেই নিজের মুখ্যমন্ত্রীর আসনটি ধরে রাখতে পেরেছেন। একই ধারা দেখা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও কেরলেও।
বিরোধী একতা: বিজেপির এখন প্রধান বিরোধী নেতৃত্ব হলেন, মমতা ব্যানার্জি, পিনারাই বিজয়ন ও এমকে স্ট্যালিন। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয় বারের জন্য নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে মমতা অন্যান্য বিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী জোট গঠন করে মোদিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে তৈরি বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কেন্দ্রীয় আইন: পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের জয়লাভের খবর পাওয়ার পরই দিল্লি সীমান্তে উল্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে। কৃষকরা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার করেছেন। এর ফলে কেন্দ্রীয় সরকার সীমান্তে বসে থাকা এই কৃষক সম্প্রদায়ের কথা ভেবে কিছু করতে পারেন বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। কারণ, আগামি বছরেই আবার উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবে নির্বাচন রয়েছে। এদিকে, বাংলায় ক্ষমতায় আসলে সিএএ কার্যকর করা হবে বলে কথা দিয়েছিল বিজেপি। এই হারের ফলে তা আপাতত ঠান্ডা ঘরেই চলে গেল বলে মনে করা হচ্ছে। তবে অসমে কী হবে তা নিয়ে ধন্দ্ব রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন