সংযুক্ত মোর্চার পক্ষ থেকে শীতলকুচির ঘটনায় বিবৃতি প্রকাশ করেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। গুলি চালানোর ঘটনায় ৪ জনের মৃত্যুকে নিন্দা জানিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত করার দাবি করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপির শীর্ষ নেতাদের ক্রমাগত উস্কানিমূলক মন্তব্যকেও তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। বিবৃতিটি নীচে দেওয়া হলো-
রাজ্যে চতুর্থ দফার নির্বাচনে কোচবিহারের শীতলকুচি বিধানসভায় পাঁচজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সকালে একটি ঘটনায় এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। আরেকটি ঘটনায় কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীর গুলিতে চারজন নিহত হয়েছেন। কোন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী এভাবে গুলি চালালো তা এখনও সবটা স্পষ্ট নয়। কিন্তু এই কাজ অন্যায় হয়েছে, এভাবে গুলি চালনায় চারজনের মৃত্যুর ঘটনাকে আমরা তীব্রভাবে নিন্দা করছি। মৃতদের পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের দাবি, এই ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্ত করাতে হবে, দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। গত কিছুদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রধানমন্ত্রী, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারের নামে হিংসার প্ররোচনা দিচ্ছেন। তেমনভাবেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার জন্য দলের কর্মীদের প্ররোচনা যুগিয়েছেন। রাজ্যে মেরুকরণের রাজনীতিকে উসকে দিতে এই পথ নিয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দল। তারা পরিস্থিতিকে কলুষিত করছে। তারই পরিণতিতে রাজ্যে হিংসার ও বিভাজনের বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে। হিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্য গড়ে তুলতে রাজ্যের জনগণের কাছে আবেদন করছি। কেন্দ্রের শাসক দল ও রাজ্যের শাসক দলের বিভাজনের রাজনীতিতে কোচবিহারে আধা সামরিক বাহিনীর গুলিতে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জেলায় জেলায় প্রতিবাদী কর্মসূচি গ্রহণ করতে আহ্বান জানানো হচ্ছে। প্রত্যেক দফার নির্বাচনের সময়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারে রাজ্যে এসে সভা করছেন। ভোটগ্রহণ পর্ব চলাকালীন তাঁর ভাষণ টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হচ্ছে। এই কাজ নির্বাচনী আচরণবিধি ও নৈতিকতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ইতিপূর্বে আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করেছি এবং নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক ভূমিকা লক্ষ্য করছি না। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের দাবি, ভোটপর্ব চলাকালীন প্রধানমন্ত্রীর সভার সম্প্রচার বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হোক। রাজ্যে অবাধ, শান্তিপূর্ণ, হিংসামুক্ত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেবার জন্যও নির্বাচন কমিশনের কাছে সংযুক্ত মোর্চা দাবি জানাচ্ছে। কলকাতা, ১০ এপ্রিল, ২০২১
বিমান বসু - ১০ এপ্রিল, ২০২১
প্রসঙ্গত, শীতলকুচির জোড় পাটকির কাজিপাড়ার ১২৬ নম্বর বুথের বাইরে গুলি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। অভিযোগ বিনা প্ররোচনায় গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এই ঘটনায় চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, আটজনের গুলি লেগেছে।
শীতলকুচির ঘটনায় বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবের কাছে পাঠানো রিপোর্টে বাহিনী জানিয়েছে - বুথের বাইরে তৃণমূল-বিজেপি উভয় দলের সংঘর্ষ বাধে। থামাতে গিয়ে আহত হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাই আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন