পছন্দের আসন না পাওয়ায় রাতারাতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন সরলা মুর্মু। সোমবার তাঁর চাঞ্চল্যকর মন্তব্য ‘দলের সবাই তো বিজেপিতে, কাকে নিয়ে লড়াই করবো’ সাড়া ফেলেছিলো রাজনৈতিক মহলে। কিন্তু দলবদল করলেও তাঁর পছন্দের আসনে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাবার কোনো সম্ভাবনা নেই। এমনটাই জানিয়েছেন এক বিজেপি নেতা।
পুরাতন মালদা থেকে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন সরলা মুর্মু। কিন্তু তাঁকে হবিবপুর থেকে প্রার্থী করায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। ওই কেন্দ্রে তাঁকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয় সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রদীপ বাস্কেকে।
পুরাতন মালদার বাসিন্দা সরলা বর্তমানে মালদা জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিকাশ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ এর আগেও দলবদল করেছেন৷ ২০১৩ সালে কংগ্রেসের টিকিটে জেলা পরিষদ আসনে জিতে সভাধিপতিও হন তিনি৷ ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন৷ ২০১৬তে প্রার্থী না করলেও এবার তাঁকে তফশিলি আদিবাসী সংরক্ষিত হবিবপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল৷ যদিও তিনি দলত্যাগ করতে পারেন সেই ইঙ্গিত পেয়েই তৃণমূল হবিবপুর আসনে তাঁর পরিবর্তে বিজেপি থেকে আসা প্রদীপ বাস্কেকে প্রার্থী করে৷ উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি হবিবপুর কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন।
সোমবার সরলা মুর্মু কলকাতায় পাঁচ বিদায়ী তৃণমূল বিধায়কের সঙ্গেই বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু তিনি তাঁর পছন্দের আসনে প্রার্থী হতে পারবেন না। কারণ, মালদা আসনটি তপশিলি জাতি সংরক্ষিত। যদিও তৃণমূলের বক্তব্য, শারীরিক অসুস্থতার জন্য সরলা মুর্মুর নাম হবিবপুর কেন্দ্র থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে৷
হেভিওয়েট দাবিদার হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচনী টিকিট না পেয়ে দলত্যাগ করা, ক্ষোভ প্রকাশ করা স্বাভাবিক বিষয় রাজনীতিতে। কিন্তু টিকিট পেয়েও শুধুমাত্র মনমত আসন না পাওয়ার জন্য দলত্যাগ করা বোধহয় নজির। নির্বাচনের ক্ষেত্রে এটা রেকর্ড।
জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরি বলেন, “আমাদের পক্ষে মঙ্গল হয়েছে৷ ভোটে জিতে পালিয়ে গেলে আমাদের কাছে আরও মারাত্মক হত।' তিনি দল ছাড়তে পারেন এই পূর্বাভাস নাকি আগে থেকেই ছিল। এমনটাই জানান তিনি। তাঁর কথায়, সরলা বরাবরই শুভেন্দুর শিবিরে ছিল৷
বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “এখন তৃণমূলের লোকেরাই ওই দলের ওপর ভরসা করতে পারছে না৷ তাঁর মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে তৃণমূলনেত্রী সরলা মুর্মুর নাম হবিবপুর আসনের প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করে দেন৷ যদিও তাঁর বাড়ি পুরাতন মালদায়৷'
তবে তিনি যে বিজেপির হয়েও প্রার্থী হতে পারবেন না তা জানিয়ে গোবিন্দচন্দ্র বলেন, 'ওই কেন্দ্রটি তফশিলি জাতি সংরক্ষিত৷ আইনগত দিক থেকেই তাঁকে ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করা যাবে না৷"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন