গত বেশ কয়েকদিন ধরেই শান্তিকুঞ্জের প্রধান সদস্য শিশির অধিকারী বলে আসছিলেন, বিজেপির হয়ে তিনি এবার বিধানসভা নির্বাচনে প্রচারে নামবেন। গত রবিবার অমিত শাহের সভায় মঞ্চে দেখা যায় প্রবীণ এই নেতাকে। তিনি বলেছিলেন, 'ধাক্কা মেরে তাড়িয়ে দিল।'
এরপর গতকাল সোমবার ছিল বিজেপির হয়ে তাঁর প্রথম সভা। কিন্তু প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর হল না বর্ষীয়ান এই নেতার। এগরা পটাশপুরের সভায় তৃণমূল-সমর্থকরা তাঁর বিরুদ্ধে মীরজাফর, চিটিংবাজ বলে স্লোগান তোলে। তাঁকে ঘিরে বিজেপি-তৃণমূল উভয়পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি লাগার উপক্রম তৈরি হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ঘটনাক্রমে নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে তৃণমূল কর্মীদের দিকে বর্ষীয়ান এই নেতাকে তেড়ে যেতে দেখা যায় বলে খবর।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পটাশপুর থানার পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। তবে এই ঘটনা অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির উদ্দেশ্য ছিল, অধিকারীদের নিজেদের ছাতার তলায় এনে পূর্ব মেদিনীপুর নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করা। ওই জেলায় এখনও অধিকারী গড়ের সদস্যদের যথেষ্ট দাপট রয়েছে। বেশকিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক শিশির অধিকারী এবং শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ। তাই শুভেন্দু যখন বিজেপিতে যোগদান করেন, তারপরই বাবা শিশির অধিকারী জানিয়েছিলেন, ছেলে যেদিকে যাবে, তিনিও সেই পথেই যাবেন।
যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা বলেছেন, তিনি (শিশির অধিকারী) না গেলেও তিনি নিজেই তাঁকে দল থেকে বের করে দিতেন। তবুও এদিনের এই ঘটনায় কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে খোদ গেরুয়ার অন্দরেই। তাই যতটা সহজ ভাবে ভাবা হয়েছিল যে, অধিকারী পরিবার পদ্ম শিবিরে যোগদান করলেই গোটা জেলা নিজেদের আয়ত্তে আনা সম্ভব হবে, সেটা হবে না বলে মনে করছে জেলা বিশেষজ্ঞ মহল। তাই এবার স্ট্র্যাটেজি কিছুটা পরিবর্তন করে বুঝেশুনে পা ফেলতে হবে সেটা নিশ্চিত।
শিশির অধিকারী নিজে এখনও পর্যন্ত খাতায় কলমে তৃণমূল সাংসদ। বিধানসভা ভোটে তিনি লড়ছেন না। প্রচার করছেন ছেলে শুভেন্দুর হয়ে। তিনি আশাবাদী, নন্দীগ্রামে শুভেন্দু জিতবে, পূর্ব মেদিনীপুরে পদ্মই ফুটবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন