গত কয়েকদিনে তৃণমূলের মনোনয়ন না পেয়ে তড়িঘড়ি বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতৃত্ব দল বদল করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। যদিও বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে এদের অনেকেই যেমন মনোনয়ন পেয়েছেন তেমনই অনেকেই আবার মনোনয়ন পাননি। প্রার্থী তালিকায় না স্থান না পাওয়াদের মধ্যে আছেন তৃণমূল ত্যাগী সোনালী গুহ, দীপেন্দু বিশ্বাস, জটু লাহিড়ীরা। আবার বিজেপিতে সদ্য যোগ দিয়েই প্রার্থী হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, রথীন চক্রবর্তী, বৈশালী ডালমিয়া, রুদ্রনীল ঘোষ, জিতেন্দ্র তেওয়ারী, প্রবীর ঘোষালদের মত তৃণমূল নেতৃত্ব।
গত বছরের শেষে ডিসেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন শুভেন্দু অধিকারী। তার পিছু পিছু তৃণমূলের অনেক নেতা, মন্ত্রী প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে দল ছাড়েন। 'কাজ করতে পারা যাচ্ছে না', 'দলে স্বাধীনভাবে মানুষের জন্য কাজ করার কোনও সুযোগ নেই', 'দলে সম্মান পাওয়া যাচ্ছে না', 'দল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত' ইত্যাদি নানা অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল তাঁদের মুখে।
এরপর নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর তৃণমূল প্রথম ২৯১টি আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে। অনেকেই দাবিদার থাকলেও টিকিট পাননি। তাঁরা ক্ষোভ জানিয়ে দলের বিরোধিতা করে হাঁটা দেন গেরুয়া শিবিরের পথে। বিজেপির প্রথম চার দফায় বিজেপির প্রার্থী তালিকায় তৃণমূলীদের আধিক্য লক্ষ্য করা গিয়েছিল। বাকি যে ১৪৮টি আসনে তালিকা গতকাল বিজেপি ঘোষণা হয়েছে, তাতেও বেশ কয়েকজন তৃণমূলীর নাম রয়েছে। তাঁরা কয়েকজন হেভিওয়েটও বটে। আবার অনেকেই আছেন যাঁরা টিকিট পাননি বলে বিজেপিতে গেছিলেন, তাঁদের অনেকেরই এবারের মতো টিকিট মিলল না। টিকিট পেয়েছেন তৃণমূল থেকে জিতেন্দ্র তিওয়ারি, বৈশালী ডালমিয়া, রথীন চক্রবর্তী, সব্যসাচী দত্ত, শীলভদ্র দত্ত।
কিন্তু টিকিট না পেয়ে প্রকাশ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের ছায়াসঙ্গী সোনালি গুহ। দিদির কাছে তিনি সম্মান পাচ্ছেন না, এই অভিযোগ তুলে তিনি দল ছাড়েন। তাঁর শুধু একটাই দাবি ছিল, 'বিজেপিতে আমি টিকিট চাই না। শুধু সম্মান দিলেই হবে।' সম্মান কতটা মিলবে সেটা সময় বলবে। কিন্তু তিনি টিকিট পাননি। তবে এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
সোনালির মতোই টিকিট না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপিতে যান প্রাক্তন ফুটবলার দীপেন্দু বিশ্বাস। যোগদানের দিন বিজেপি নেতারা মজা করে বলেছিলেন, তাঁকে গোল করতেই হবে। যদিও তাঁকে গোল করার সুযোগ এবার দিল না গেরুয়া শিবির।
সেই সময় দল ছেড়েছিলেন তপনের দুবারের বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদাও। মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ বাচ্চু যদিও বিজেপিতে নাম লেখানোর পরপরই মানসিক অশান্তিতে ভুগে তৃণমূলে ফেরার চেষ্টাও চালান। সেই তাঁকেও প্রার্থী করেনি বিজেপি। একইভাবে শিবপুরের বিদায়ী বিধায়ক জটু লাহিড়িকেও টিকিট দিল না গেরুয়া শিবির। তবে, তাঁর কেন্দ্রে তৃণমূলত্যাগী তথা হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তী এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন